STOP Eve Teasing (Bangla)


চাই সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ

ইভ টিজিংকে হালকাভাবে না দেখে 'ভয়ংকর যৌন হয়রানি', 'যৌন সন্ত্রাস' কিংবা 'জনসমক্ষে অপরাধ' হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে দেশের বিশিষ্টজনরা বিস্ফোরণোন্মুখ এ সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে জোটবদ্ধ আন্দোলন ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, অপরাধী পার পেয়ে যাচ্ছে বলেই মারাত্মক এই সামাজিক উৎপীড়ন আজ বিস্ফোরণোন্মুখ অবস্থায় পেঁৗছেছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। এতে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার টনক নড়ে যাওয়া উচিত। অথচ কিছুই হচ্ছে না। তাঁদের মতে, এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া মানেই একে প্রশ্রয় দেওয়া। এটাকে আর বাড়তে দেওয়া যায় না। প্রশাসন এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ অন্যায়গুলো বাড়তেই থাকবে। বিশিষ্টজনরা ইভ টিজিং রোধে কঠিন আইন করে তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, পুলিশকে আরো দায়িত্বশীল ও সক্রিয় করা, বখাটেদের দাগি অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা, এলাকায় এলাকায় কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া, কয়েকজন বখাটে ও তাদের সহযোগীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে তা ফলাও করে প্রচার করা, বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে উৎপীড়কদের নানাভাবে লজ্জা দেওয়ার মতো বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা বলেছেন, যেসব সামাজিক কারণে এ ব্যাধিটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তা প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ইভ টিজিং রোধে সামাজিক প্রতিরোধের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধও জরুরি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে 'বিশেষ সংঘ প্রতিষ্ঠা' ও প্রতিটি থানায় তালিকা করে অভিযুক্তদের মাসিক হাজিরার রীতি চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক মেয়েদেরই প্রতিবাদী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, পারলে সঙ্গে একটি লাঠি বা শক্ত জুতা রাখো। একদিন সবাই মিলে প্রতিবাদ করুন। সালমা আলীর মতে, মেয়েরা লজ্জায়, ভয়ে কুঁকড়ে থাকে বলেই এর সুযোগ নিচ্ছে ওরা। সালমা খানও বলেছেন, প্রতিরোধের ব্যাপারে মেয়েদের আরো সাহসী হতে হবে। মনের মধ্যে জেদ থাকতে হবে_'আমরাও দেখে নেব।' সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক অনুপম সেন বলেছেন, সমাজে মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে মানুষের প্রতি, মেয়েদের প্রতি, মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। নারী নেত্রী আয়েশা খানম এটা প্রতিরোধে তরুণদের বিনোদনের জন্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা এবং বই পড়ার ক্লাব গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বেশির ভাগ মহল থেকে অপরাধীরা প্রটেকশন পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গতকাল কালের কণ্ঠকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে দেশের ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক ও নারী আন্দোলনকর্মী এ ধরনের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা ইভ টিজিংয়ের ভয়ংকর রূপ নেওয়ার কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন : মোশতাক আহমেদ, পার্থ সারথী দাস, শরীফা বুলবুল, রেজাউল করিম।

সচেতন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ইভ টিজিংয়ের কারণে আত্মহত্যা বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। ইভ টিজিং হঠাৎ বেড়ে যায়নি। এখন এটিকে প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পরিবারের দিক থেকেও অনুশাসনের প্রয়োজন রয়েছে। পরিবারের সব সদস্যের পাশাপাশি সমাজনেতাদেরও এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে।

সামাজিক প্রতিরোধের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধও জরুরি
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইভ টিজিং হঠাৎ বাড়েনি, বেড়েছে ধীরে ধীরে। এখন এটি বিস্ফোরণোন্মুখ অবস্থায় যাচ্ছে। এই সামাজিক ব্যাধির বড় কারণ হলো_সমাজে অনুকরণীয় আদর্শের অভাব। আরো একটি বড় কারণ বেকারত্ব। যুবক ও তরুণদের সামনে কোনো আশা নেই। নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে তারা। মাদকেও আসক্ত হচ্ছে। এটি প্রতিরোধের জন্য সর্বদলীয় প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। এর উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই। এই সামাজিক প্রতিরোধের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধও জরুরি। সামাজিক জনমতও তৈরি করতে হবে।

'বিশেষ সংঘ প্রতিষ্ঠা' ও অভিযুক্তদের মাসিক হাজিরার রীতি চালু করা যেতে পারে
ইভ টিজিংসহ বিভিন্ন অনৈতিকতা ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে 'বিশেষ সংঘ প্রতিষ্ঠা' ও প্রতিটি থানায় তালিকা প্রকাশ করে অভিযুক্তদের মাসিক হাজিরার রীতি চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। এই প্রস্তাব নিয়ে তিনি কয়েক দিনের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এখন মানুষকেই জেগে উঠতে হবে। তাঁর মতে, প্রতিটি স্কুল ও কলেজে জনপ্রিয় শিক্ষকদের নেতৃত্বে বিশেষ সংঘ গড়ে তোলা যায়। প্রতিটি শ্রেণীর ভালো ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এ সংঘ হবে। এতে ভালো শিক্ষার্থীরাই থাকবে। এদের সংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০ হতে পারে। স্কুল ও কলেজে এ ধরনের একটি দল গঠন করে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করার মধ্য নিয়ে বিপথগামী হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই রোধ করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা যাবে মানবিকভাবে।
অধ্যাপক সায়ীদ বলেন, ইভ টিজিং, মাদকাসক্তি বা অন্য কোনো অপরাধে যুক্ত শিক্ষার্থীকেও এই দলটি সমবেত চেষ্টার মধ্য দিয়ে ভালো পথে ফিরিয়ে আনবে। তখন ইভ টিজিং বা অন্য কোনো অপরাধ করলে অপরাধীকে জিজ্ঞেস করা হবে। এই প্রক্রিয়া শুরু হলে ইভ টিজিং করতে গেলে অপরাধীকে অবশ্যই ভাবতে হবে।

ধরপাকড় বা তদন্ত ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়
বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, ইভ টিজিং মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। স্থানীয়ভাবে সামাজিক অনুশাসন না থাকায় এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর থেকে মুক্তি পেতে আইনি ব্যবস্থা, পুলিশি ধরপাকড় বা তদন্ত ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, গোড়ায় গলদ হলো, সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে দেওয়া নকশা অনুযায়ী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। এটা করলে স্থানীয় সরকার এলাকার মধ্যে সঠিক অর্থে স্থানীয় জনকর্তৃত্বের সরকার প্রতিষ্ঠিত হতো। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের কার্যকলাপ ভালো বা মন্দ হোক স্থানীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকত। তখন কেউ এই অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার সাহস পেত না। তিনি আরো বলেন, শুধু ঢাকায় বসে এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থায় পুলিশের মাধ্যমে সমাজে শান্তি স্থাপন করা যায় না। আমি আশা করি, সরকার বিশেষ করে সংসদ সদস্যরা সংবিধান অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করবেন। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণকে জনগণের শাসনের অধীনে রাখতে হবে, যা মোগল আমলে ছিল ষোলআনা, ইংরেজ আমলে ছিল আংশিক এবং এখন নিশ্চিহ্ন। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হলে সব পরিবার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই সমস্যার প্রতিকারে সবাই উদ্বুদ্ধ হবে।

পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থা ঝাঁজরা হয়ে গেছে
কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক বলেন, প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। কেন ঘটছে বলতে পারব না। প্রতিদিন খুন হচ্ছে দেশের কোথাও না কোথাও। মা ছেলে-মেয়েকে মেরে ফেলছে, ছেলে মাকে মেরে ফেলছে। ভাতিজার হাতে খুন হচ্ছে চাচা। এ ধরনের ঘটনা একটা ঘটলে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার টনক নড়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। সবাই এসব মেনে নিয়েছে। যেন এগুলো হওয়াই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, ইভ টিজিং কেন হয়? কিশোর উত্তীর্ণরা প্রায় সবাই কর্মহীন। কাজ নেই। পড়াশোনার বালাই নেই। কী করবে বুঝতে পারে না। তারা মনে হয়, চিন্তা করে যে স্বাদ বদলাই। জীবনে বৈচিত্র্য আনতেই মনে হয় তারা এসব করে। শুধু ইভ টিজিং কেন, যে দেশে বিনা বিচারে মানুষ খুন করে একটা নিয়মিত গল্প বলে চালিয়ে দেওয়া হয়, সেই দেশকে আমি আদৌ স্বাধীন বলে মনে করি না। ইভ টিজিং নিয়ে বিভিন্ন সময় অনেক কথা বলেছি। আমি সব সময় মেয়েদের বলি. তোমার নিজেদের আত্মরক্ষা নিজেরা করো। মেয়েরা সব সময়, এমনকি যে স্কুলে যাওয়ার সময় বোরকা পরে, সে সঙ্গে একটা লাঠি রাখে না কেন? শক্ত একজোড়া জুতো রাখতে পার না? তোমাকে যে বিরক্ত করবে তাকে জুতো মারতে পার না? তোমার আত্মরক্ষা তুমি করবে না? বাবা-মাকে বলি, আপনি কি একা? আরো মেয়েদের অভিভাবক নেই? আপনারা প্রতিরোধ করতে পারেন না? একদিন সবাই মিলে প্রতিবাদ করুন। সবাই মিলে মারলে দুয়েকটা হয়তো মরে যেতেও পারে। মরুক, সবাই মিলে মারলে কোনো ক্ষতি নেই।
জনগণ সচেতন হলে আইন করা লাগে না। সরকারকে বলি, আইন খাটছে কি না, জনসাধারণ মানছে কি না তা দেখেন। খুন করে জেল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। আইন করাই কি দায়িত্ব? তা পালন হচ্ছে কি না দেখতে হবে না? আর আইন যারা প্রয়োগ করে, তারাও কি এভাবেই থাকবে? আমি বলব, পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থা ঝাঁজরা হয়ে গেছে। দেশে রাষ্ট্রব্যবস্থা বলে কিছু নেই। থাকলে এরকম হতো না।

ওই উৎপীড়কদের নানাভাবে লজ্জা দেওয়া উচিত
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ড. হামিদা হোসেন বলেন, প্রথমেই আমার আপত্তি হচ্ছে ইভ টিজিং শব্দটি নিয়ে। কারণ, এটি একটি হালকা শব্দ। এটা কোনোভাবেই এত হালকা হতে পারে না। এটা তো যৌন হয়রানি। আর এটা হঠাৎ করে বেড়ে যায়নি, সমাজের ভেতরে আগেও হতো। কিন্তু পত্রপত্রিকায় ভালোভাবে রিপোর্ট হয়নি বলে এটা সবার নজরে আসেনি। তিনি বলেন, ছেলেরা মনে করে এটা তাদের অধিকার এবং এটা করলে কিছু যায়-আসে না। এ ছাড়া কেউ যেহেতু ধরা পড়ছে না এবং ধরা পড়লেও ক্ষমতাসীনদের প্রটেকশন পাচ্ছে, এর ফলে তাদের বিচার হচ্ছে না, সেজন্য ঔদ্ধত্য বেড়ে গেছে। আরেকটি কারণ হচ্ছে_মেয়েরা এখন ব্যাপকহারে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য এখনো প্রকট। এই কালচার ভাঙতে হবে। এটা প্রতিরোধ করতে আইন কার্যকর করতে হবে। এর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে পুলিশের তা সিরিয়াসলি দেখা উচিত। সমাজের দায়িত্বশীল মানুষকে এ ব্যাপারে মনিটরিং করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীকে কেবল মিটিং করলেই হবে না, পাড়ায় পাড়ায় উঠান বৈঠক, স্কুলে কমিটি করানো উচিত। বিভিন্ন সংগঠনের সোচ্চার হয়ে ওই উৎপীড়কদের নানাভাবে লজ্জা দেওয়া উচিত।

পাশ্চাত্য মিডিয়ার প্রভাবে আঘাতটা বেশি হচ্ছে
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অনুপম সেন বলেন, ইভ টিজিং বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধে বড় ধরনের আঘাত আসছে। পাশ্চাত্য মিডিয়ার প্রভাবে আঘাতটা বেশি হচ্ছে। যেমন, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বোম্বে স্টাইলের বিষয়গুলো পাশবিক চেতনাকে উজ্জীবিত করে। এটা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো সমাজে মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনা, মানুষের প্রতি, মেয়েদের প্রতি, মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। অপরাধী বখাটে সন্ত্রাসীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার পাশাপাশি আমাদের শিক্ষাক্রমে মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগানোর বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

অপরাধীরা প্রটেকশন পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে
মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ইভ টিজিং নতুন কোনো ঘটনাও নয়। ফাহিমা-মহিমার ঘটনার আগে ও পরে এর শিকার হয়ে কত প্রাণ ঝরে গেল। ১০-১২-১৫ বছরের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলেই এটা বোঝা যাবে, এর ভেতরে কত নৃশংসতা ঘটেছে। এর অনেক কারণ আছে। পরিবারগুলোতে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে মারাত্মকভাবে। রাজনৈতিক সহনশীলতা কমে যাওয়াও এর একটি বড় কারণ। অধিকাংশ মহল থেকে অপরাধীরা প্রটেকশন পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এ অপরাধের মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের তরুণসমাজ, যারা আমাদেরই সন্তান তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, পোশাক-আশাকে আধুনিক হলে চলবে না, মননে মানবিক উপাদান থাকতে হবে। এটা প্রতিরোধে তরুণদের বিনোদনের জন্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্তি এবং বই পড়ার ক্লাব গড়ে তোলা যেতে পারে।

কিছু ঘটনার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সেটা ফলাও করে প্রচার করা যেতে পারে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, প্রথমত আমি এটাকে ইভ টিজিং বলব না। এটা রীতিমতো যৌন হয়রানি। তা ছাড়া এদের বখাটে বললে কেমন যেন আদুরে মনে হয়, এরা আসলে দাগী অপরাধী। এদের ঘৃণ্য অপরাধী হিসেবেই দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণেই এটা হচ্ছে। যেমন ঘুষখোর বাবার পক্ষে কিন্তু সন্তানকে অতটা শাসনে রাখা সম্ভব নয়। তা ছাড়া দেখে দেখেও এটা অনেকে করছে। তারা দেখছে, এটা করলে কোনো শাস্তি হচ্ছে না। পাতিনেতাদের সহযোগিতার কারণেও এটা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার মতে, প্রতিকার করতে হলে কঠিন আইনের শাসন দরকার। কিছু ঘটনার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সেটা ফলাও করে প্রচার করা যেতে পারে। পাশাপাশি যারা এতে সহযোগিতা করবে, তাদেরও শাস্তি দিতে হবে।

এর চেয়েও খারাপ কাজ হচ্ছে, কিন্তু কোনো শাস্তি হচ্ছে না
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কাজী সালেহ আহম্মেদ বলেন, কোনো সন্দেহ নেই, ইভ টিজিং একটা খারাপ কাজ। কিন্তু যারা এটা করছে, তারা দেখছে সমাজে এর চেয়েও খারাপ কাজ হচ্ছে, কিন্তু কোনো শাস্তি হচ্ছে না। এলাকাভিত্তিক নেতারা অন্যায় করলেও শাস্তি হচ্ছে না। এ জন্য আমার মতে, ইভ টিজিংয়ের পাশাপাশি অন্য অন্যায়গুলোরও বিচার করতে হবে। সমাজনেতা, রাজনৈতিক নেতারাও অন্যায় করলে শাস্তি দিতে হবে।

ইভ টিজিং নয়, এটা একটা বড় অপরাধ
নিজেরা করি-এর নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির বলেন, 'ইভ টিজিং' শব্দটা এর সঙ্গে যায় না। এটা একটা বড় অপরাধ। এর মাত্রা এত বেশি বেড়ে গেছে যে, প্রতিবাদ করলেই মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। আইনের প্রয়োগ যথাযথ হচ্ছে না বলেই এটা বেড়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া মানেই একে প্রশ্রয় দেওয়া। আমাদের প্রশ্ন, পুলিশ কী করছে? তারা আমাদের টাকায় বেতন খাচ্ছে অথচ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হচ্ছে মাকে, শিক্ষককে। কেন? একজন মা প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধ করতে গেলে তাঁকে যদি হত্যা করা হয়, তাহলে তিনি তো তাঁর অন্য সন্তানদের কথা ভেবে আর প্রতিবাদের সাহসও করবেন না। ভেবে অবাক হই, পুলিশ মাঝে মাঝে এমন বক্তব্য দিচ্ছে যা প্রশ্রয় দেওয়ার মতো। অথচ পুলিশেরই এটা বেশি প্রতিরোধ করা উচিত। কারণ, এটা মানবাধিকারের জন্য হুমকি, দেশের ভাবমূর্তির জন্য লজ্জাজনক। এটাকে আর বাড়তে দেওয়া যায় না। প্রশাসন এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ অন্যায়গুলো কেবল বাড়তে থাকবে। তাই এখনই প্রতিরোধ দরকার।

এটা জনসমক্ষে ক্রাইম
উইম্যান ফর উইম্যান-এর সভাপতি সালমা খান বলেন, ইভ টিজিং নয়, আমি এটাকে জনসমক্ষে ক্রাইম বলছি। এই সহিংসতা বাড়ছে। কিন্তু অপরাধীরা সেভাবে গ্রেপ্তার হচ্ছে না। নারীকে শারীরিক-মানসিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তারা এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। এই গ্রুপটার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, শক্তি ও বিশ্বাসের ভিত্তি কোথায়, তা বের করতে হবে। প্রতিবাদ করায় এরা একজন মানুষকে মেরে ফেলল। এর বিচার হিসেবে কারাদণ্ডই কি যথেষ্ট? এদের শক্তির উৎস জানতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে খুনের বিচার করতে চাইলে তা হবে না। এর জন্য সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি সামাজিক সমীক্ষা দরকার। প্রতিরোধের ব্যাপারে মেয়েদের আরো সাহসী হতে হবে। মনের মধ্যে এমন জেদ থাকতে হবে যে, 'আমরাও দেখে নেব।' এর জন্য ভয়ে ভীতু হলে চলবে না। হতে হবে ঐক্যবদ্ধ, আত্মপ্রত্যয়ী এবং ব্যক্তিত্বময়ী। দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে মেয়েদের কারাতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, সাইকেল দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে আমাদের মেয়েদেরও এ রকম ব্যবস্থা করে তাদের আত্মবিশ্বাসের ভিত বাড়িয়ে দিতে হবে।

সম্মিলিতভাবে বাধা দিতে হবে
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম বলেন, ইভ টিজিং যুগে যুগেই চলে আসছে। আগে মানুষ কম ছিল, প্রচারও কম হতো। এখন মানুষ বেশি, ইভ টিজিংও বেশি হচ্ছে আবার প্রচারও বেশি হচ্ছে। তবে সচেতনতাও কিন্তু বাড়ছে। মানুষ প্রতিবাদী হচ্ছে। যদিও প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তবু প্রতিবাদ চলবেই। সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে, তাহলেই এটা বন্ধ হবে।

সন্তানদের বোঝানো দরকার যে এটা খারাপ, এটা করা ঠিক নয়
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, অনেক বাবা-মা আছেন, যাঁরা সন্তানদের দিকে খেয়াল রাখেন না। বাসায় একা রেখে বাবা-মা চলে যাচ্ছেন, কিন্তু রেখে যাচ্ছেন মোবাইল-ইন্টারনেটের সুযোগ। অনেকে সাইবার ক্যাফেতেও যাচ্ছে। এসব করে তারা উত্তেজিত হয়। এ জন্য বাবা-মায়েদের উচিত সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা। তাঁদের (বাবা-মা) উচিত সন্তানদের বোঝানো যে, এটা খারাপ, এটা করা ঠিক নয়।

পারিবারিকভাবে সন্তানদের নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে
মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে বর্তমান যুবসমাজের কোনো সম্পর্ক নেই। অবসরে যুবকদের জন্য প্রয়োজন খেলার মাঠ, অবকাশকেন্দ্রসহ সময় কাটানোর স্থান। ঢাকা শহরে এর বালাই নেই। ফলে তারা যত্রতত্র গড়ে ওঠা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে বসে সময় কাটায় এবং মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। তিনি বলেন, মূল কারণ হিসেবে বলা যায়, সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে এবং মেয়েদের পণ্য হিসেবে ধরা হচ্ছে। ফলে ইভ টিজিং সমস্যাটা দিন দিন বেড়েই চলছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন। আমাদের সবাইকে এ জন্য সচেতন হতে হবে এবং কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পরিবারেরও কিছু কর্তব্য আছে। পারিবারিকভাবে সন্তানদের নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। একটি সন্তান জন্ম নেওয়ার পর থেকেই তার প্রতি সুনজর দিতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়নের অভাব ও পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার ফল
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির বলেন, এটা ইভ টিজিং নয়, যৌন হয়রানি। সামাজিক ব্যাধি। নারীর ক্ষমতায়নের অভাবে ও পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিক্ষক মিজান, এক মা নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন। আমি বলব, তাঁরা শহীদ হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে নারীর মানবাধিকার রক্ষা। কিন্তু বারবার এ অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে নৃশংসভাবে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে বখাটেরা যাতে আর কোনো প্রশ্রয় না পায়, তার জন্য সরকারকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।

মেয়েরা লজ্জায় ভয়ে কুঁকড়ে থাকে বলেই এর সুযোগ নিচ্ছে ওরা
জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী বলেন, এটা ইভ টিজিং নয়, এটাকে আমি সন্ত্রাস বলেই সংজ্ঞায়িত করছি। এর জন্য নারীশিশু নির্যাতন দমন আইন আছে। কিন্তু এখানে পুরুষতান্ত্রিক মাইন্ড সেট হয়ে গেছে বলেই 'ল অ্যান্ড অর্ডার মিস হচ্ছে'। ২০০৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ ছাত্র এটাকে কোনো অপরাধই মনে করছে না। অন্যদিকে আমাদের মেয়েরা লজ্জায় ভয়ে কুঁকড়ে থাকে বলেই এর সুযোগ নিচ্ছে ওরা। এর আরো একটি কারণ হচ্ছে, সমাজে নারীকে মানুষ হিসেবে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অনেক বিজ্ঞাপন, নাটকে দেখা যায়, নারীর সৌন্দর্যকে হাইলাইট করা হচ্ছে, ব্যক্তিত্বকে নয়। এগুলো সমাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আমাদের সমাজে প্রতিশোধপরায়ণতা এত বেড়ে গেছে যে, এখানে এখন প্রতিবাদী হওয়ার পরিবেশ নেই। অথচ সমাজের একটা বড় দায়িত্ব থাকা উচিত, যেটা হচ্ছে না।



ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এবার ফরিদপুরে প্রাণ গেল এক মায়ের
ফরিদপুরের মধুখালীতে ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এবার এক স্কুলছাত্রীর মাকে মোটরসাইকেলে চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার পশ্চিম গাড়াখালী এলাকার ফুড গোডাউনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হওয়া মায়ের নাম চাঁপা রানী ভৌমিক (৪৮)। তিনি মধুখালী চিনিকলের বাণিজ্যিক বিভাগের টাইপিস্ট কাম ক্লার্ক ছিলেন।
এ ব্যাপারে চম্পার ভাই অরুণ কুমার ভৌমিক বাদী হয়ে মধুখালী উপজেলার বাজার এলাকার দেবাশীষ সাহা ওরফে রনিকে (২২) আসামি করে মধুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ মোটরসাইকেলটি আটক করলেও রনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
হত্যার প্রতিবাদে আজ বুধবার বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মধুখালী। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, চিনিকলের শ্রমিক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। একই সঙ্গে হত্যাকারীর গ্রেপ্তারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মধুখালী বাজারের মদের ব্যবসায়ী রতন সাহার বখাটে ছেলে দেবাশীষ সাহা রনি ফরিদপুর চিনিকলের বাণিজ্যিক বিভাগের কর্মচারী চাঁপা রানী ভৌমিকের দুই জময মেয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী হীরা ও মুক্তাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বাধা দিলে তারা এক মেয়েকে অপহরণ করার হুমকি দিত। সম্প্রতি রনির উত্ত্যক্তের ঘটনা মারাত্মক হওয়ায় চাঁপা রানী বিষয়টি মধুখালী উপজেলার চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মঞ্জু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুরাইয়া সালাম ও চিনিকল উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের জানান। তাঁরা রনি ও তার পিতাকে ধমক দিয়ে শাসন করলে বখাটে রনি আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন সময় ওই পরিবারকে হুমকি দেয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চাঁপা রানী ভৌমিক তাঁর স্বামী স্বপন বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবেশী হারান চন্দ্র সরকারের মেয়েকে বিদায় জানাতে মধুখালী রেল গেটে আসেন। বাড়ি ফেরার পথে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে মোটরসাইকেল দিয়ে চাপা দেওয়া হয়। এতে চাঁপা রানী গুরুতর আহত হন। তাঁকে প্রথমে মধুখালী হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ বিকেল চারটায় নিজ বাড়ির উঠোনে চাঁপা রানীকে সমাহিত করা হয়েছে।
এদিকে চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়ন চাঁপা রানীর হত্যার প্রতিবাদে তিন দিনব্যাপী শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) হেলালুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে। ইভ টিজিংয়ের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আওলাদ আলী ফকির জানান, ইভ টিজিংয়ের ব্যাপারে আগে আমাকে জানানো হয়নি বা সাধারণ ডায়েরিও করেনি। তবে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ইভ টিজিংয়ের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। দুর্ঘটনার মামলা না নিয়ে হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে।